শিশুর বুদ্ধিমত্তা বিকাশের জন্য ১০টি টিপস

 শিশু ও কিশোর

শৈশবে শিশুর বুদ্ধিমত্তা বিকাশ, আশপাশের পরিবেশে ও মানুষের, খাদ্যাভ্যাস সহ নানা বিষয়ের উপর নির্ভর করে বড় হয়ে সে কতটুকু বুদ্ধিমান হবে। তাই সচেতন অভিভাবক হিসাবে আপনার জানা উচিৎ শিশুর বুদ্ধিমত্তা বিকাশের ফেক্টর গুলো কি কি। কিভাবে বাড়াবেন আপনার শিশুটির ইন্টিলিজেন্স গ্রোথ?

১) গল্প, ছড়া ও কবিতা শোনান
আপনার শিশুকে নিয়মিত শিশুতোষ ছড়া, কবিতা, গল্প ইত্যাদি শুনালে শিশু দ্রুত কথা শেখা ও বলতে পারে। এছাড়াও শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়বে এবং তার শব্দ ভান্ডারে নতুন নতুন শব্দ যুক্ত হবে। কবিতা ও গল্প শিশুদের কল্পনা শক্তি বাড়ায় এবং শিশুর সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

২। বিভিন্ন প্রাণী বা বস্তুর আওয়াজ শোনান
শিশুকে পশু,পাখি বা বস্তুর ভিন্ন ভিন্ন আওয়াজ বুঝতে সহযোগিতা করুন। বিভিন্ন পাখি, গরু-ছাগল, হাঁস -মুরগি ইত্যাদি প্রাণীর ডাক আলাদা আলাদা করে বুঝাবেন। এভাবে তার আশেপাশের বিভিন্ন জিনিসের সাথে বিভিন্ন ধরণের শব্দ কিভাবে একটা আরেকটার সাথে জড়িত তা সে বুঝতে শিখবে যে।

৩) বর্ণমালার সাথে পরিচয় ঘটান
যখন শিশু কথা বলতে শিখবে তখন তাকে মাতৃভাষার বর্ণমালার অক্ষরগুলো চিনতে সাহায্য করুন। শেখার ক্ষেত্রে কখনোই তাকে জোর করবেন। এর ফলে শিশুর শেখার আগ্রহ কমে যাবে, যা তার ভবিষ্যতে পড়াশোনা বা যেকোন বিষয় শেখার আগ্রহের ক্ষেত্রে অনীহা তৈরি করবে। তার বর্ণমালা চেনার প্রক্রিয়াটি যেন আনন্দময় ও খেলার ছলে হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।

৪) সংখ্যার ধারণা দিন
শিশুদের বর্ণমালার সাথে সাথে সংখ্যার ধারণাও দিন। যেমন- একটি বল, দুটি পাখি-এরকম। সংখ্যা গণনার জন্য শিশুকে তার হাতের আঙ্গুলের মাধ্যমে গুণতে শেখাতে পারেন যা অত্যন্ত। বর্ণমালার মতোই সংখ্যার পরিচিতিটাও শিশুর কাছে যেন আনন্দময় ও খেলার ছলে হয়।

৫) বিভিন্ন জিনিসের আকৃতি ও রঙ এর ধারণা দিন
আপনার শিশুকে আমাদের চারপাশের প্রতিটি বস্তুর ভিন্ন ভিন্ন আকার ও রঙ এর ধারণা পেতে সহযোগিতা করুন। ধরুন, আপনার শিশুর সাথে আপনি একটি বল নিয়ে খেলছেন। তাকে বলতে পারেন, “দেখ বাবু, এটা একটা বল ও এটার রঙ লাল। আর বলটি গোল।“।

৬) নিজ থেকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে দিন
শিশুর সব কাজেই আপনি সিদ্ধান্ত দেবেন না; তাকে প্রতিদিনের কিছু ছোটোখাটো কাজে নিজ থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন। যেমন- সে কোন পোশাকটি পরতে চায় বা কি খেতে চায়, এরকম সিদ্ধান্ত নিতে শিশুকে উৎসাহিত করুন। এতে তার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে।

৭) বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন
বিভিন্ন বিষয়ে আপনার শিশুকে প্রশ্ন করুন ও তাকে নিজ থেকেই উত্তর দিতে সাহায্য করুন। যেমন- কেন সিঁড়ি দিতে দ্রুত নামা ঠিক নয়। তাকে এটা বুঝতে বলতে সহযোগিতা করবেন যেন, এতে সে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেতে পারে। এরকম নানা বিষয় নিয়ে তাকে সহজ ও ছোট ছোট প্রশ্ন করতে পারেন।

৮) শিশুকে নিয়ে ঘুরতে বের হোন
মাঝে মাঝেই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘুরে আসুন জাদুঘর, লাইব্রেরি বা স্থানীয় বাজার থেকে। তাকে বিভিন্ন বিষয় জানান, প্রশ্ন করতে উৎসাহিত করুন এবং সব কিছু তাকে দেখতে দিন। তার উত্তর ও প্রতিক্রিয়া মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করুন। এর দ্বারা শিশুর মাঝে বিভিন্ন জিনিস শেখার আগ্রহ বেড়ে যাবে।

৯) শিশুকে ঘরের বিভিন্ন কাজে যুক্ত করুন
শিশু কিছুটা বড় হলে তাকে বাসার বিভিন্ন সহজ ও ছোট ছোট কাজ করতে উৎসাহিত করুন। যেমনঃ তার নিজের বই, খেলনা ইত্যাদি তাকেই গুছাতে দিন। কাজটি সে যেভাবেই করুক তাকে উৎসাহিত করুন। এর ফলে তার মাঝে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার বিষয়ে আত্মবিশ্বাস গাঁড় হবে।

১০) শিশুকে খেলতে দিন
শিশুকে বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলাতে উৎসাহ দিন। এটা হতে পারে সহজ কুইজ, সুডোকু, লুকোচুরি, কানামাছি বা লুডো। একটু বড় হলে দাবা, ক্রিকেট, ফুটবল বা তার যেসব খেলায় আগ্রহ রয়েছে। এতে তার অন্য শিশুদের সাথে যোগাযোগের দক্ষতা বাড়বে এবং তার বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সাহায্য করবে।